শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:০৬ অপরাহ্ন

যে সময়ের ইবাদতে আল্লাহ সবচেয়ে বেশি খুশি হোন

যে সময়ের ইবাদতে আল্লাহ সবচেয়ে বেশি খুশি হোন

মানুষের সৃষ্টি ইবাদতের জন্যই। আল্লাহর সবচেয়ে প্রিয় ইবাদতগুজার বান্দা। গভীর রাতের ইবাদত অনেক বেশি পছন্দ করেন আল্লাহ তায়ালা।

আল্লাহকে ডাক দিলে তিনি ফেরেশতাদের কাছে তার খুশি প্রকাশ করেন। নামাজে সুরা পাঠ করলে তিনি ফেরেশতাদের বলতে থাকেন, তোমরা দেখ আমার বান্দা আমার প্রশংসা করছে।

পৃথিবীতে যদি শুধু ইলমই আমাদের জন্য যথেষ্ট হতো আমলের প্রয়োজন না হতো, তাহলে আল্লাহ তায়ালা রাতের শেষ ভাগে এসে বান্দাদের প্রতি তার এই ঘোষণা অনর্থক হতো।

কোন প্রয়োজন প্রার্থী আছে? (আমি তার প্রয়োজন পূর্ণ করবো)। ২. কোন ক্ষমা প্রার্থনকারী আছে? (আমি তাকে ক্ষমা করে দিব)। কোন তাওবাকারী আছে? (আমি তার তাওবা কবুল করবো)।

রাসুলের (সা.) কাছে একদা সাহাবায়ে কেরামের এক জামাত আবদুল্লাহ ইবনে উমরের (রা.) প্রশংসা করলে হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, কতইনা প্রসংশনীয় সে ব্যক্তি যে তাহাজ্জুদ পড়ে রাতের শেষ ভাগে। (বুখারি ও মুসলিম)

অপর সাহাবিকে রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উপদেশ দিয়ে বললেন, হে অমুক! ঘুমে বেশি সময় অতিবাহিত করো না, কেননা রাতের অধিক ঘুম তোমাকে কিয়ামতের দিন নিঃস্ব বানিয়ে উঠাবে। (ইবনে মাজাহ)

মহান রাব্বুল আলামীন পবিত্র কুরআনে তাহাজ্জুদ পড়ার আদেশ করেছেন। তাহাজ্জুদ আদায়কারীদের প্রশংসা ও গুনকীর্তন করেছেন।

আল্লাহ তায়ালা তাহাজ্জুদের আদেশ করতে গিয়ে ইরশাদ করেন, তোমরা রাতের শেষ ভাগে তাহাজ্জুদ আদায় কর। (সূরা বনি ইসরাঈল ৭৯)

অন্য আয়াতে আল্লাহ তায়ালা শেষ রাতে ইবাদতকারীদের প্রশংসা করতে গিয়ে বলেন, রাতের শেষ প্রহরে তারা ক্ষমা প্রার্থনা করত ।

অপর আয়াতে বিশেষ ব্যক্তিদের সাথে শেষ রজনীতে ইবাদত কারীদের আলোচনা করতঃ ইরশাদ করেন, তারা ধৈর্য ধারনকারী, সত্যবাদী, নির্দেশ সম্পাদনকারী, সৎপথে ব্যয়কারী। শেষ রাতে ক্ষমা প্রার্থনাকারী, (সূরা আল ইমরান ১৭)

হাদিস শরীফে বর্নিত আছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, তিন প্রকারের আওয়াজ আল্লাহ তায়ালার কাছে খুবই প্রিয়

১. ভোর বেলায় মোরগের ডাক। ২. কুরআন তেলাওয়াতের আওয়াজ। ৩. শেষ রজনীতে ক্ষমা প্রার্থনাকারীদের কান্নাকাটির আওয়াজ।

হযরত সুফিয়ান সাওরী (রহ.) হতে বর্ণিত, শেষ রজনীতে আল্লাহ তায়ালা এমন এক বাতাস প্রবাহিত করেন, যা বান্দাদের শেষ রজনীর ইবাদত, যিকির, দুআ ও ইস্তেগফার আল্লাহ তায়ালা কাছে নিয়ে যায়।

হযরত সুফিয়ান সাওরী (রহ.) হতে আরো বর্ণিত আছে, রাতের অগ্রভাগে একজন ঘোষণাকারী ঘোষণা করেন, হে ইবাদতকারী বান্দা বান্দিরা! উঠে যাও, তখন ইবাদত কারীরা উঠে নামাজে দাড়িয়ে যায়, যতক্ষণ ইচ্ছা নামাজ আদায় করতে থাকেন। এরপর মধ্যরাতে একজন ঘোষণাকারী ঘোষণা করেন, ওহে আল্লাহর আনুগত্য বান্দা বান্দিরা! উঠে যাও তখন তারা উঠে রাতের শেষাংশ পর্যন্ত নামাজ আদায় করতে থাকে।

এভাবে রাতের শেষ ভাগে একজন ঘোষণাকারী ঘোষণা করেন ওহে ক্ষমা প্রার্থনাকারীরা! উঠে যাও তখন ক্ষমা প্রার্থীরা উঠে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাক।

অবশেষে যখন ফজরের সময় ঘনিয়ে আসে তখন একজন ঘোষণাকারী ঘোষণা করেন, হে গাফেলরা! হে উদাসীনতার চাদর আবৃতব্যক্তিরা! গাফলতির চাদর ছেড়ে দিয়ে উঠ। তখন তারা ধীরে ধীরে উঠতে থাকে, যেন মৃতদেরকে কবর থেকে উঠানো হচ্ছে।

লেখক: তরুণ আলেম ও আলোচক

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877